ধর্ম ডেক্স. জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (UDHR, ১৯৪৮) যে মৌলিক অধিকারের কথা বলে সেগুলো হচ্ছে- “জীবন, সম্পদ, ধর্ম, মতপ্রকাশ ও ন্যায়বিচার”। অথচ ইসলাম চৌদ্দশ বছর আগে সেগুলোকে আল্লাহপ্রদত্ত দায় বা প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে।
আধুনিক মানবাধিকার দর্শন ‘স্বাধীনতা’কে কেন্দ্রে রাখে, কিন্তু ইসলামী দর্শনে মূল কেন্দ্র দায়িত্ব ও নৈতিক সীমা। কারণ সীমাহীন স্বাধীনতা মানবতার বিনাশ ডেকে আনে, অথচ দায়িত্বনির্ভর স্বাধীনতা সমাজে এনে দেয় স্থিতি।
আধুনিক বাস্তবতায় ইসলামী মানবতার প্রাসঙ্গিকতা
আজকের পৃথিবীতে যখন “মানবাধিকার” রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে গেছে, তখন ইসলামী দৃষ্টিকোণই প্রকৃত মুক্তির পথ দেখায়। গাজায় শিশু হত্যার পরও বিশ্ব নীরব, কিন্তু মহানবী (সা.) যুদ্ধের ময়দানে এক শিশুর মৃতদেহ দেখে কেঁদে উঠেছিলেন। এ দৃশ্যই মানবিকতার সর্বোচ্চ রূপ।
ইসলাম শেখায় শত্রুও মানুষ, আর মানুষ মানেই মর্যাদাপূর্ণ সৃষ্টির প্রতিনিধি। এজন্যই ইসলামী সভ্যতা যুদ্ধেও শিল্প, সংস্কৃতি, জ্ঞান ও ন্যায়বিচারের প্রসার ঘটিয়েছে।
খলিফা উমর (রা.) জেরুজালেম জয় করে শত্রুর ঘরে প্রবেশের সময় কোনো সৈনিককে লুটতরাজ করতে দেননি; বরং গির্জায় নামাজ না পড়ে তা সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। যেন ভবিষ্যতে মুসলমানরা দখল না নেয়।
এটি ইতিহাসে মানবাধিকারের সবচেয়ে জীবন্ত দলিল
ইসলাম শুধু শান্তির ধর্ম নয়, বরং ইসলাম ন্যায়নিষ্ঠা ও শান্তির ধর্ম। যুদ্ধের মধ্যেও ইসলাম মানবতার মর্যাদা রক্ষা করেছে, শান্তির সময় তা পূর্ণতা দিয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন— ‘প্রকৃত শক্তিশালী সে নয়, যে যুদ্ধে জয়ী হয়; বরং সে, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১১৪)
আজকের বিশ্বে ইসলামী মানবাধিকারনীতি শুধুই ইতিহাস নয়, এটি ভবিষ্যতের ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ সভ্যতার ভিত্তি। মানুষ তখনই প্রকৃত নিরাপত্তা পাবে, যখন মানবাধিকার কোনো মানবনির্মিত চুক্তি নয়, বরং আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হবে।
