ক্রীয়া ডেস্ক. একেকজনের ভাবনা একেক রকম। আমি যেমন রুমে একা থাকতে পছন্দ করি। ওই সময়ে অনেক মুভি আর ওয়েব সিরিজ দেখি। অনেকেই আছে, যারা মিউজিক শুনতে পছন্দ করে।
অনেকে আড্ডা দিতে ভালোবাসে। আমাদের আড্ডাটা কিন্তু ক্রিকেট নিয়েই হয়।
প্রশ্ন : আপনার কথাই রাখছি। আজ ক্রিকেটীয় কোনো আলাপেই আর ঢুকছি না।
তবে এটি তো নিশ্চয়ই বলা যায় যে ক্রিকেট জীবনে রুমমেট হিসেবে যাঁদের পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে মজাদার চরিত্র কে?
নাজমুল : একেকজন একেক রকম। মোসাদ্দেক (হোসেন) মজা করতে পছন্দ করে, ঘুরতে পছন্দ করে, একটু শপিং করতেও ভালোবাসে। মিরাজ (মেহেদী হাসান) একেক দিন একেক রকম। ওর চরিত্র বোঝা মুশকিল।
কিন্তু আমার সুবিধা হচ্ছে আপনি যতই ঘরে আলো জ্বালিয়ে রাখেন বা হাই ভলিউমে গান বাজান, আমার সমস্যা হবে না। আমি যদি মনে করি ঘুমিয়ে পড়ব, পৃথিবীর কেউই আমাকে আটকাতে পারবে না।
প্রশ্ন : ধরুন, পাঁচ দিনের টেস্ট তিন দিনেই শেষ বা একটি ওয়ানডেতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ফল হয়ে গেছে। বাকি সময়টা কিভাবে কাটান?
নাজমুল : একেকজনের ভাবনা একেক রকম। আমি যেমন রুমে একা থাকতে পছন্দ করি।
ওই সময়ে অনেক মুভি আর ওয়েব সিরিজ দেখি। অনেকেই আছে, যারা মিউজিক শুনতে পছন্দ করে। অনেকে আড্ডা দিতে ভালোবাসে। আমাদের আড্ডাটা কিন্তু ক্রিকেট নিয়েই হয়।
প্রশ্ন : আপনি তারকা হওয়ার আগে জীবন ছিল এক রকম, এখন নিশ্চয়ই কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। নিজের শহর রাজশাহীতে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় কি তারকাখ্যাতি ভুলে যান?
নাজমুল : হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি গ্রামে গিয়ে সময়গুলো খুবই উপভোগ করি। আমাদের ওখানে একটা মাঠ আছে, হাঁটু পর্যন্ত পানি ওঠে। এবারও খেলেছি। যদিও আমি বুট ব্যবহার করি (হাসি…), ওরা (বন্ধুরা) খালি পায়ে খেলে। কিন্তু ওদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে। আমার রাজশাহী শহরের কিছু বন্ধু আছে, ওরা খেলা দেখতে আসে। মজার বিষয় হলো, ওরা আমাকে দেখে অবাক হয়। হয়তো অনেক সমস্যা হতে পারে, চোটে পড়তে পারি, কিন্তু বিশ্বাস করুন, এসব কিছুই তখন মাথায় থাকে না। একদম ছোটবেলায় ফিরে যাওয়া হয়।
প্রশ্ন : বাস্কেটবল কিংবদন্তি মাইকেল জর্ডানের টি-শার্ট পরে আছেন। ক্রিকেটের বাইরে কি এই খেলাটিই বেশি পছন্দ?
নাজমুল : ফুটবল বিশ্বকাপটা একটু মনোযোগ দিয়ে দেখি। বাস্কেটবল সেই অর্থে খুব বেশি দেখি না, তবে মাইকেল জর্ডানের ভক্ত বলতে পারেন। তাঁর খেলা মাঝেমধ্যে ইউটিউবে দেখি। এর বাইরে ফুটবল খুব পছন্দ করি, খেলতেও ভালো লাগে। ক্লাব ফুটবল অনেক রাতে হয়, এ জন্য দেখার সুযোগ কম।
প্রশ্ন : খেলা না থাকলে আপনি অনেক ক্রিকেট ম্যাচও দেখেন বলেই জানি। আপনার মনে দাগ কাটার মতো তিনটি ম্যাচের কথা বলুন।
নাজমুল : বাংলাদেশের দুটো ম্যাচ আছে। একটা ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে, আরেকটা ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সাকিব (আল হাসান) ভাই আর রিয়াদ (মাহমুদ উল্লাহ) ভাইয়ের সেঞ্চুরিতে জিতেছিলাম। এই দুটো ম্যাচ আমার কাছে খুবই স্মরণীয়। এর বাইরে ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে যা হলো! ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের ওই ম্যাচটি অবিশ্বাস্য লেগেছে। এ রকম ফাইনাল আর হবে কি না, আমার সন্দেহ আছে। এই তিনটি ম্যাচ আমার স্মৃতিতে অনেক দিন থাকবে।
প্রশ্ন : আপনাদের টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবাল নতুন গাড়ি কেনার ব্যাপারে আপনাকে কিছু একটা বলছিলেন বলে মনে হলো?
নাজমুল : আমি গাড়ি চালাতে খুব একটা পছন্দ করি না। তবু গাড়ির প্রতি আমার বেশ নেশা আছে। বাংলাদেশে এই শখটা না থাকাই ভালো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই শখটা আমার আছে। চেষ্টা করব একটা পছন্দের গাড়ি কেনার। বিএমডব্লিউ এই মুহূর্তে পছন্দের তালিকায় আছে। এখন যেটি আছে (হোন্ডা সিভিক), সেটি নিয়ে আমি খুশি। কিন্তু শখ তো শখই! ভালো গাড়ি, বড় গাড়ি, আরামে বসা—এই জিনিসগুলো আমার ভালো লাগে। আমি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে খুব পছন্দ করি। মাঠে আমার সব কিছু দিয়ে ফেললেও মাঠের বাইরে আমি বড্ড অলস একজন মানুষ। আমি খুব আরাম পছন্দ করি। তাই একটু ভালো, আরামদায়ক বাসা আর একটা ভালো গাড়ির শখ আমার আছে। যদিও বাংলাদেশে এই শখ থাকাটা ভালো নয়।
প্রশ্ন : ক্রিকেটার না হলে কী হতেন?
নাজমুল : ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছা শুরু থেকেই ছিল না। ছোটবেলায় অনেক কিছু হতে চাইতাম। কখনো ডাক্তার, কখনো ইঞ্জিনিয়ার, কখনো কোরআনের হাফেজ। কিন্তু ক্রিকেটে চলে এসেছি। পাড়ায় ক্রিকেট খেলার একটা প্রবণতা সব সময়ই ছিল। সেখান থেকেই ক্রিকেটের পেছনে চলে আসা।
প্রশ্ন : শেষ করতে চাই আপনার স্বপ্নের টেস্ট একাদশ দিয়ে। ধরুন, আপনি অধিনায়ক। এই দলে কাকে কাকে রাখতে চান?
নাজমুল : (অনেক ভেবে) ম্যাথু হেইডেন আর শচিন টেন্ডুলকার ওপেন করবেন। আমি তিনে। চারে ব্রায়ান লারা, পাঁচে রিকি পন্টিং। এরপর জ্যাক ক্যালিস, কুমার সাঙ্গাকারা (উইকেটকিপার), সাকিব আল হাসান, ওয়াসিম আকরাম, গ্লেন ম্যাকগ্রা, মুত্তিয়া মুরালিধরন এবং ডেল স্টেইন বা কার্টলি অ্যামব্রোসের একজন। ও আচ্ছা, ১২ জন হয়ে গেছে নাকি? তাহলে এক কাজ করুন। আমাকে বাদ দিয়ে দিন।
