সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
Homeস্বাস্থ্যঅন্যান্যবকেয়া পরিশোধ না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে...

বকেয়া পরিশোধ না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে আদানি

অনলাইন ডেস্ক: ভারতের আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বকেয়া বিল পরিশোধের দাবি জানিয়ে সতর্ক করেছে, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদানির পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। তারা জানিয়েছে, যদি ১০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হয়, তাহলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।’

অক্টোবরের শেষ দিকে আদানি পাওয়ারের ভাইস চেয়ারম্যান ও হেড অব এনার্জি রেগুলেটরি অ্যান্ড কমার্শিয়াল অবিনাশ অনুরাগ বিপিডিবি চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠান। তাতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পাওনা আদায়ের জন্য বারবার অনুরোধ জানানো হলেও বিপিডিবি এখনো ৪৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৯৬ কোটি ডলার) পরিশোধ করেনি। এর মধ্যে ২৬২ মিলিয়ন ডলারকে বিপিডিবি নিজেই ‘বিরোধহীন পাওনা’ হিসেবে স্বীকার করেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টের (পিপিএ) ১৩.২ ধারা অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হলে সরবরাহ স্থগিতের অধিকার আদানির রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সরবরাহ বন্ধ থাকলেও চুক্তি অনুযায়ী কেন্দ্রের নির্ভরযোগ্য উৎপাদন সক্ষমতার ভিত্তিতে তারা সক্ষমতা চার্জ (ক্যাপাসিটি পেমেন্ট) পাওয়ার অধিকার রাখে।

বিপিডিবির একাধিক সূত্র জানায়, আদানির দাবিকৃত টাকার পরিমাণ নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে। কয়লার দাম ও সরবরাহ ব্যয়ের বিষয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হলে পুরো পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।

এমন হুঁশিয়ারি এর আগেও দিয়েছে আদানি পাওয়ার। গত বছরও ৮০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া দাবি করে তারা বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছিল। তখন বিপিডিবি অভিযোগ করে, আদানি নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি ব্যবহার করে বকেয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেখিয়েছে।

পিডিবির ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট (ক্ষমতা ১,৬০০ মেগাওয়াট) থেকে বাংলাদেশে প্রতি মাসে গড়ে ৯৩২.৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এই কেন্দ্রটি মূলত বাংলাদেশে রপ্তানির উদ্দেশে নির্মিত হয়।

শেখ হাসিনা সরকারের সময় ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারত সরকারের তৎকালীন নীতিমালা অনুযায়ী, আদানি কেবল প্রতিবেশী দেশগুলোতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারত। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত সরকার আইনে পরিবর্তন আনে, যার ফলে আদানি স্থানীয় বাজারেও বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি পায়।

বর্তমানে বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে বিপিডিবি ও আদানি পাওয়ারের মধ্যে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদঃ

সাম্প্রতিক মন্তব্য