রনি মজুমদার.
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) দেশের মাদকবিরোধী কার্যক্রমের পাশাপাশি নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত করে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। উচ্চ প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষায় প্রতারণার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি ডিএনসি সিপাহী (১৭তম গ্রেড) পদে ১০৫টি এবং ওয়্যারলেস অপারেটর (১৮তম গ্রেড) পদে ১২টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে সিপাহী পদে প্রায় ২৬ হাজার এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে প্রায় ১১ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। কয়েক ধাপের বাছাই শেষে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন সিপাহী পদে ১,০৮২ জন এবং ওয়্যারলেস অপারেটর পদে ১২৪ জন প্রার্থী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের দায়ে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে ৫ জনকে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতারণার সরঞ্জামসহ এবং ১৩ জন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করা হয়। ঘটনাস্থলেই ডিএনসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড প্রদান করেন।
উদ্ধার হওয়া ডিভাইসগুলো ছিল অত্যাধুনিক স্পাই কমিউনিকেশন সরঞ্জাম, যার একটি অংশ কানের ভেতরে স্থাপনযোগ্য ক্ষুদ্রাকৃতির ইয়ারপিস মাইক্রোফোন এবং অন্যটি জিএসএম কার্ড সংযুক্ত ডিভাইস। এই ডিভাইসের মাধ্যমে ব্লুটুথ সংযোগে বাইরে থাকা সহযোগীদের সঙ্গে গোপনে কথোপকথন করা সম্ভব হতো।
ডিএনসি সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরীক্ষার আগেই একটি সংঘবদ্ধ চক্রকে শনাক্ত করে তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রাখা হয়। পরীক্ষার দিন অভিযান চালিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর জালিয়াতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই প্রতিটি ধাপে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলও একই দিনে প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে প্রার্থীদের মধ্যে আস্থা বজায় থাকে।
ডিএনসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি বা প্রতারণার কোনো সুযোগ নেই এবং ভবিষ্যতের সকল নিয়োগও একইভাবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জালিয়াতিমুক্তভাবে সম্পন্ন করা হবে।
