আন্তর্জাতিক. জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সম্প্রতি ভারতের তৈরি তিনটি শিশুদের কফ সিরাপ নিয়ে নতুন সতর্কবার্তা জারি করেছে। সংস্থাটি জানায়, এসব সিরাপে বিপজ্জনক মাত্রায় বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গেছে, যা শিশুদের জন্য মারাত্মক প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি করছে।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সিরাপ তিনটি হলো,‘কোল্ডরিফ’ (উৎপাদক: শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালস), ‘রেসপিফরেশ টিআর’ (উৎপাদক: রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস), এবং ‘রিলাইফ’ (উৎপাদক: শেপ ফার্মা)।
এই তিনটি কফ সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোল নামের বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যার মাত্রা স্বাভাবিক সীমার চেয়ে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি। শিশুদের ওষুধে অল্পমাত্রায় এটি ব্যবহারযোগ্য হলেও অতিমাত্রায় থাকলে গুরুতর বিষক্রিয়া, কিডনি বিকল হওয়া এবং মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।
গত আগস্টে ভারতের শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘কোল্ডরিফ’ সিরাপ খেয়ে ১৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়। এর আগে ২০২৩ সালে ভারতীয় আরেক কোম্পানির তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তান, ক্যামেরুন ও গাম্বিয়ায় ১৪১ শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল।
ফলে আবারও বিশ্বজুড়ে ভারতীয় ওষুধের গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, বিশেষত শিশুদের ব্যবহারের জন্য তৈরি ওষুধ নিয়ে।
ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিসসিও) জানিয়েছে, তারা ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা পেয়েছে এবং বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করছে। সংস্থাটি জানায়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকাতে মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও কঠোর ও স্বচ্ছ করা হবে।
এদিকে ডব্লিউএইচও বিশ্বের সব দেশকে সতর্ক করেছে, যাতে উল্লেখিত সিরাপগুলো বাজারে না আসে বা শিশুদের ব্যবহারে না দেওয়া হয়।
এর আগেও ডব্লিউএইচও একাধিকবার ভারতীয় ওষুধ শিল্পের নিরাপত্তা মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ২০২২ সালের শেষ দিকে গাম্বিয়ায় ভারতীয় সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে দেশটির ফার্মাসিউটিক্যাল খাত।
নতুন এই সতর্কতা আবারও ভারতীয় ওষুধ শিল্পের ভাবমূর্তি ও আস্থাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
