অনলাইন ডেস্ক: তামিলনাড়ুর করুরে পদপিষ্ট হয়ে অসংখ্য হতাহতের ঘটনায় পুরো রাজ্যজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। ভারতীয় গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর দ্রুতই রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা, সামনে এসেছে একের পর এক প্রশ্ন।
অভিনয় জগত থেকে রাজনীতির ময়দানে আসা থালাপতি বিজয় এবং তার দল তামিলাগা ভেট্রি কাজাগম (টিভিকে) এবার সরাসরি বিতর্কের কেন্দ্রে। শাসকদল ডিএমকে অভিযোগ তুলেছে, সমাবেশে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় টিভিকে-র মারাত্মক গাফিলতিই এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। এরইমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে দলের তিন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে আলোচনায় এসেছে—এই ঘটনায় বিজয় নিজেও কি আইনি ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন?
যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন এখনও কোনো সরাসরি মন্তব্য করেননি।
তার বক্তব্য, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সরকার আপাতত গ্রেফতারের পথে যেতে চাইছে না। কারণ তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিলে উল্টোভাবে বিজয় রাজনৈতিক সহানুভূতি অর্জন করতে পারেন।
অন্যদিকে, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজয়ের দল টিভিকে।
একই সুরে কথা বলেছেন বিজেপির সাবেক সভাপতি কে আন্নামালাই। বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব আবার দায় চাপাচ্ছে ডিএমকের প্রশাসনিক ব্যর্থতার ওপর। ইতিমধ্যেই মাদ্রাজ হাই কোর্টে নিরপেক্ষ তদন্তের আবেদন করেছে টিভিকে, যা সোমবার দুপুরে শুনানির জন্য ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই বিজয় দ্রুত চেন্নাই ফিরে যান। এই সিদ্ধান্তও তার বিরুদ্ধে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
রবিবার করুর যাওয়ার চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলার অজুহাত দেখিয়ে তাকে সেখানে যেতে দেয়নি রাজ্য প্রশাসন। তবে নিহতদের পরিবারকে তিনি ২০ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনীতিতে নতুন হলেও বিজয় ইতোমধ্যে ডিএমকে ও বিজেপির বিরুদ্ধে বেশ সরব হয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, করুরের মর্মান্তিক ঘটনা তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। তবে যদি তাকে গ্রেফতার করা হয়, উল্টো জনমনে সহানুভূতির স্রোত বইতে পারে তার পক্ষে। সব মিলিয়ে, এখন আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুরো তামিল রাজনীতি।
