স্পোটর্স ডেস্ক : ৪১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ (২৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ম্যাচটি তাই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে একটি ঐতিহাসিক ম্যাচ হতে যাচ্ছে।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে ভারত সর্বাধিক আটবার শিরোপা জিতেছে, পাকিস্তান দুইবার। এবার ভারত নবম শিরোপা এবং পাকিস্তান তৃতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে।
১৯৮৬ সালের শারজাহ ফাইনাল ক্রিকেট ইতিহাসের একটি অমর মুহূর্ত হিসেবে স্মরণীয়। শেষ বলে জয়ের জন্য পাকিস্তানের ৪ রান প্রয়োজন ছিল। বোলিংয়ে ছিলেন চেতন শর্মা। তার দেওয়া ইয়র্কারটি ফুল টসে পরিণত হলে জাভেদ মিয়াঁদাদ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ছক্কা মেরে নাটকীয় এক উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন। মিয়াঁদাদ ১১৬ রানে অপরাজিত থাকেন, যা ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছে।
উইলস ট্রফি ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। পাকিস্তান শুরুতে ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে। তবে জাহিদ ফজল এবং সেলিম মালিকের ১৭১ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ম্যাচের দিক পরিবর্তন করে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ভারত ১৯০ রানে অল আউট হয়ে যায় এবং পাকিস্তান ৭২ রানের বড় জয় তুলে নেয়।
১৯৯৪– অস্ট্রাল-এশিয়া কাপ : পাকিস্তান ৩৯ রানে জয়ী
১৯৯৪ সালের শারজাহ ফাইনালে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৫০ রান সংগ্রহ করে। হাফ সেঞ্চুরি করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আমির সোহেল এবং বাসিত আলী। জবাবে ভারত নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বিনোদ কাম্বলির ৫৬ রানের প্রতিরোধের পর ভারত ২১১ রানে অল আউট হয়। পাকিস্তান ৩৯ রানের সহজ জয় তুলে নেয়।
১৯৯৮– ইন্ডিপেনডেন্স কাপ, ঢাকা : ভারত ৩ উইকেটে জয়ী
ঢাকায় সিলভার জুবিলি স্বাধীনতা কাপ ফাইনালে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে সাঈদ আনোয়ারের ১৪০ এবং ইজাজ আহমেদের ১১৭ রানের ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে। জবাবে সৌরভ গাঙ্গুলীর ১২৪ রানের ইনিংসে তিন উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্য পূরণ করে জয় নিশ্চিত করে ভারত।
১৯৯৯ – পেপসি কাপ, ব্যাঙ্গালোর : পাকিস্তান ১২৩ রানে জয়ী
ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বে পেপসি কাপ ১৯৯৯ ফাইনালে প্রথমে ব্যাটিং করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ইনজামাম-উল-হক ৯১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। জবাবে ভারত মাত্র ১৬৮ রানে অল আউট হয়ে যায় এবং পাকিস্তান ১২৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় লাভ করে।
১৯৯৯ – কোকা-কোলা কাপ, শারজাহ : পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
পেপসি কাপ জয়ের অল্প সময় পরে পাকিস্তান শারজাহ কোকা-কোলা কাপ ফাইনালে আরো একটি বড় জয় তুলে নেয়। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ভারত ৪৫ ওভারে ১২৫ রানে অল আউট হয়। জবাবে পাকিস্তান সাত উইকেটে লক্ষ্য পূরণ করে ফাইনাল জিতে নেয়।
২০০৭- আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল, জোহানেসবার্গ : ভারত ৫ রানে জয়ী
২০০৭ সালের উদ্বোধনী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথমে ব্যাটিং করে গৌতম গম্ভীরের ৭৫ ও রোহিত শর্মার ৩০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ভারত। লক্ষ্য তাড়ায় এক পর্যায়ে ১০৪ রানে ৭ উইকেট থেকে মিসবাহ-উল-হক দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৩ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। হাতে ছিল একটি উইকেট। যোগিন্দর শর্মা তার স্নায়ু ধরে রেখে ভারতকে একটি নাটকীয় পাঁচ রানের জয় এনে দেন।
২০১৭ – আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনাল, দ্য ওভাল: পাকিস্তান ১৮০ রানে জয়ী
২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনালটি সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ। পাকিস্তান ফখর জামানের ১১৪ রানের অসাধারণ ইনিংসে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ভারত মাত্র ১৫৮ রানে অল আউট হয়ে যায়। পাকিস্তান ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে জিতে প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘরে তুলে।
