আর নিউজ: খুলনায় নবজাতক চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শাহাজাদী ও তার মা নার্গিস বেগম অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে বিকেলে কারাগার ও হাসপাতাল প্রিজন সেল থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান জানান, সকালে আদালতের আদেশের অনুলিপি তুলে জামিনের আবেদন করলে আদালত বিশেষ বিবেচনায় এবং বিনা জামানতে তাদের জামিন দেন।
খুলনা জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মাদ মুনীর হোসাইন বলেন, দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে নার্গিস বেগমকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। আর বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে শাহাজাদীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আদালতে হাজির করা হলেও আইনজীবী না থাকায় শাহাজাদীর জামিন শুনানি হয়নি। আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সেখানে নবজাতক সন্তানকে নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে মঙ্গলবার পুনরায় জামিন আবেদন করা হয় এবং তা মঞ্জুর হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে শাহাজাদী সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে কোনো খোঁজখবর না নেওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর রূপসার একটি ক্লিনিকে শাহাজাদীর কোলজুড়ে জন্ম নেয় পঞ্চম সন্তান-এক কন্যাশিশু। এর আগে তার আরো চার কন্যাসন্তান জন্মেছিল। অন্তত এবার ছেলে হবে, এমন প্রত্যাশা করেছিলেন স্বামী সিরাজুল ইসলাম ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। কিন্তু মেয়ে জন্ম নেওয়ায় সিরাজুল হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান এবং আর ফিরে তাকাননি।
পরিবারের চাপ ও হতাশার মধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর একই হাসপাতাল থেকে চার দিন বয়সী আরেক নবজাতক ছেলে চুরি হয়।
সিসিটিভি ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমের কাছ থেকে। এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশকে তিনি জানান, মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে নবজাতকটি চুরি করেছিলেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মো. মির্জা সুজন মানবপাচার আইনে মামলা করেন। সেই মামলায় শাহাজাদী ও তার মাকে আসামি করা হয়।
