সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
Homeআইন-আদালতচকলেটের আবরণে আসছে মাদক কিটামিন

চকলেটের আবরণে আসছে মাদক কিটামিন

রনি মজুমদার: গুলশানের ডিজে পার্টিসহ রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় অভিযান চালিয়ে পার্টি ড্রাগ এমডিএমএ সরবরাহকারী চক্রের মূল হোতা সহ সিন্ডিকেটের সব সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ এমডিএমএ ও কুশ উদ্ধার করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফের নির্দেশনায় পরিচালিত মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএনসি ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপপরিচালক শামীম আহমেদ ও উপপরিচালক মেহেদী হাসানের তত্ত্বাবধানে উত্তরা সার্কেলের এনফোর্সমেন্ট টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সেগুনবাগিচা, পল্টন এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানের সময় যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত এমডিএমএ বা এক্সটাসি, মলি, হ্যাপি ড্রাগসহ ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট ৩১৭ পিস, কুশ ১ কেজি ৬৭৬ গ্রাম, উন্নত মানের গাঁজা ২৫০ গ্রাম, ৫টি কাচের বোতলে কিটামিন ৫০ মিলিলিটার। এছাড়া ৬টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ এবং নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

ডিজি জানান, জুবায়ের (২৮) সহ স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া প্রযুক্তি-দক্ষ, শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির কয়েকজন এই চক্রের অংশ। তারা গাঁজা, কুশ, এমডিএমএ, কিটামিনসহ অন্যান্য আধুনিক মাদক পার্সেল যোগে উন্নত দেশ থেকে আমদানি করত। এরপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মহানগরে পার্টি ড্রাগ হিসেবে ডিজে পার্টি ও অভিজাত সোসাইটিতে সরবরাহ করত।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা যায়, একটি মাদক চালান ডাকযোগে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসি উপপরিচালক শামীম আহমেদ ও মেহেদী হাসানের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের একটি রেইডিং পার্টি পল্টন মডেল থানাধীন পুরাতন ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাক শাখা থেকে পার্সেলটি তল্লাশি করে। কাগজের কার্টুনের ভিতরে বিদেশী ব্র্যান্ডের চকলেটের নিচে বাবল পেপারে মোড়ানো স্বচ্ছ পলি প্যাকেটে লালচে এমডিএমএ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে পার্সেলটির প্রাপক জুবায়ের সনাক্ত করা হয় এবং তাকে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে আটক করা হয়। জুবায়েরের তথ্য অনুযায়ী পার্সেলটি তার বন্ধু অপূর্ব রায়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল। অপূর্ব রায়কে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সৈয়দ শাইয়ান আহমেদকে (২৪) গাঁজা ও এমডিএমএসহ আটক করা হয়। এছাড়া চক্রের আরেক হোতা জি এম প্রথিত সামসকে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে এমডিএমএ, গাঁজা ও কিটামিন জব্দ করা হয়।

ডিজি বলেন, এই মাদক কৃত্রিম সাইকোঅ্যাকটিভ ড্রাগ, যা ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলে পাওয়া যায়। এটি উত্তেজক ও ভ্রমসৃজনকারী প্রভাব সৃষ্টি করে, দ্রুত সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নর-অ্যাড্রেনালিন মুক্ত করে ব্যবহারকারীকে ইউফোরিয়া, আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক ঘনিষ্ঠতার অনুভূতি দেয়। আলো, সঙ্গীত ও সংযোগকে তীব্রভাবে অনুভব করায় এটি পার্টি বা ডান্স ক্লাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদঃ

সাম্প্রতিক মন্তব্য