রাজবাড়ী প্রতিনিধি: আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলে দেড় বছর আগে বিয়ে করেছে। এখনো তার কোনো সন্তান হয়নি। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন, সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত বাংলাদেশি সৈনিক শামীম রেজার বাবা আলমগীর ফকির।
নিহত সৈনিক শামীম রেজার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামে। তার বাবা আলমগীর ফকির।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম রেজা ছিলেন সবার বড়। পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে তিনি ছিলেন শান্ত স্বভাবের, দায়িত্বশীল ও পরিশ্রমী একজন তরুণ।পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শামীম রেজা ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন। কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে সুদানে যান। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলায় তিনি নিহত হন।
শামীম রেজার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানজুড়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড়। ঘরের বাইরে বসে বিলাপ করছেন পরিবারের সদস্যরা। সদ্য নির্মিত একতলা বাড়ির ভেতরে শোকাহত মা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
নিহত সৈনিকের ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, ‘গতকাল টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকেই আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হইভাই আর নেই। গত শুক্রবারই সে বাড়িতে ভিডিও কলে কথা বলেছিল। তখনো কিছু বুঝতে পারিনি।
শামীম রেজার মৃত্যুর খবরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

