অনলাইন ডেক্স. চীনের জিয়াংসু প্রদেশের ফেংহুয়াং পর্বতের চূড়ায় অবস্থিত জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক স্থাপনা ওয়েনচ্যাং প্যাভিলিয়নে গত সপ্তাহে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এক পর্যটকের অসাবধানতাবশত মোমবাতি ও ধূপ ব্যবহারের কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড। দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বুধবার (১২ নভেম্বর) এই ঘটনা ঘটে।
অনলাইনে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপ এবং ছবিগুলোতে দেখা যায়, পাহাড়ের চূড়ার তিনতলা কাঠামোটি থেকে আগুনের লেলিহান শিখা ও কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এই দৃশ্য স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্যের ভিডিও এবং ছবিগুলোতে দেখা যায়, তিনতলা প্যাভিলিয়নটি দ্রুত আগুনে গ্রাস হচ্ছে এবং এর ছাদের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। যদিও এই মন্দির কমপ্লেক্সে কোনো আদি প্রাচীন নিদর্শন ছিল না, তবুও এটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর আধুনিক পুনর্নির্মাণ ছিল এবং অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
জানা গেছে, প্যাভিলিয়নটি ২০০৯ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং শতবর্ষ পুরোনো ইয়ংকিং মন্দির কর্তৃক পরিচালিত হতো। যদিও এটি একটি আধুনিক স্থাপনা ছিল, এর নকশা ছিল এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর প্রতিচ্ছবি।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক দর্শনার্থীর মোমবাতি এবং ধর্মীয় ধূপের অসাবধানতামূলক ব্যবহার থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই কর্মকাণ্ডকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, এর ফলে শুধু ঐতিহ্যবাহী স্থানই নয়, আশপাশের বনাঞ্চলও ঝুঁকির মুখে পড়েছিল।
এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং আগুন প্যাভিলিয়নের বাইরে ছড়িয়ে পড়েনি। এই ঘটনাটি চীনে ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোতে পর্যটকদের আচরণ ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। এই ঘটনাটি ২০২৩ সালে গানসু প্রদেশের শতবর্ষ পুরোনো শানডান গ্রেট বুদ্ধ টেম্পলের অগ্নিকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, যেখানে বেশির ভাগ কমপ্লেক্সই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে একই ধরনের ঘটনা রোধ করতে শিগগিরই বর্ধিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর, মূল কাঠামোর ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে এর পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

